প্রকাশিত: Sun, May 12, 2024 1:42 PM
আপডেট: Sun, Jun 22, 2025 12:10 PM

২০১০ সাল পর্যন্ত দেখেছি গ্রামের স্যাকরার দোকান, নরসুন্দরের ঘর, চায়ের দোকানেও পত্রিকা থাকতো

শারফিন শাহ : বাসার পাশেই পত্রিকা স্টল। সত্তর পেরনো এক বৃদ্ধ পত্রিকা, ম্যাগাজিন নিয়ে বসেন। বাসায় প্রথম আলো, ডেইলি স্টার তো নিয়মিত থাকেই। এগুলোর বাইরে দরকার মনে হলে কোনোদিন এই স্টল থেকে পত্রিকা কেনা হয়। কারণ পত্রিকা আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। তো এই ভদ্রলোককে কৌতূহলবশত জিজ্ঞেস করলাম। কত বছর আছেন এই ব্যবসায়? -তা ৫০ বছর তো হবেই। এখন তো আর এই ব্যবসা জমে না। পত্রিকা এখন পাঠক পড়ে না। ভিউয়ের জোয়ারে পড়ার অভ্যাসটাই নাই হয়ে গেছে। হ্যাঁ এখন দিনে যা বিক্রি হয়, তাতে সংসার চালানো দায়। আমার অন্য ব্যবসা আছে।

আমার ছেলের সবজির ব্যবসা। কিন্তু আমি এই কাজটাকে বুকে ধারণ করি। এই পত্রিকাই তো আমাকেও আমার ছেলেমেয়েদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করেছে। কত বড় বড় মানুষ আমাকে এই পত্রিকা বিক্রির কারণেই চীনে। তাই এই ব্যবসা ছাড়তে পারি না। কী সব ফেসবুক আসছে নাকি সেখানে নাকি সব পাওয়া যায়। কিন্তু আমি তো আগের লোক। এসব বুঝি না।  ২০১০ সাল পর্যন্ত দেখেছি গ্রামের স্যাকরার দোকান, নরসুন্দরের ঘর, চায়ের দোকানেও পত্রিকা থাকত। মানুষ খবর পড়ত দারুণ আগ্রহ নিয়ে। কিন্তু এসবের কিছুই এখন আর নেই। পাঠের সংস্কৃতিই উঠে গেছে। এখন আসলে খুব দরকার ছাড়া কেউ কিনে কিছু পড়ে না। কারণ ফেসবুকে সবই পাওয়া যায়। সবই দেখা যায়। এই মাত্রাতিরিক্ত দেখাদেখি আমাদের বিশাল একটি গোষ্ঠীকে আর্থিকভাবে সচ্ছলতা দিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু আরেকটি গোষ্ঠীকে পাশাপাশি পঙ্গুও করে তুলছে। এর ভার আমরা বইতে পারব তো? লেখক: গবেষক ও প্রাবন্ধিক